ভাটির পিতা মাননীয় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ চরিতামৃত ।
ভাটির পিতা মাননীয় রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ
– রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, আমার খুব খুব প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব, তাকে দেখছি দীর্ঘদিন ধরে, আমার ব্যক্তিগত মূল্যায়ন তাকে নিয়ে, সেটাই লিথলাম, আল্লাহ এই মহান মানুষটিকে ভালো রাখুক ।
সবার প্রিয় হামিদ ভাই, এখন হয়ে গেছেন মহামান্য। সবাই তাকে এখন মহামান্য হিসাবেই ডাকেন। হামিদ নামটি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। মহামান্য নামেই তিনি এখন কাছের মানুষদের কাছে সমধিক পরিচিত। এ তথ্য বঙ্গভবন ও রাষ্ট্রপতির ঘনিষ্ট একাধিক সুত্রের। জানা গেছে, ব্যক্তিগত জীবনে রাষ্ট্রপতি প্রচন্ড আড্ডাবাজ, এক হৃদয়-খোলা মানুষ। খুব সাদা মাটা, সহজ সরল জীবনে অভ্যস্ত। বঙ্গভবনে অফিস শেষে গভীর রাত পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি প্রতিনিয়ত নিজস্ব লোকজন নিয়ে আড্ডা মারেন। আড্ডার এ তালিকায় মন্ত্রি, এমপি, দলীয় ও নিজ নির্বাচনী এলাকার লোকজন রয়েছেন।
সূত্রমতে, রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেবার পর থেকে তার নিজস্ব কোন নির্বাচনী এলাকা নাই। ইটনা, মিঠামাইন ও অষ্টগ্রাম থানা এলাকা নিয়ে গঠিত কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে ৬ বার নির্বাচিত সাংসদ ছিলেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। সাংসদ থেকে পর্যায়ক্রমে ডেপুটি স্পিকার, স্পিকার হয়ে আব্দুল হামিদ দেশের রাষ্ট্রপতির চেয়ারে এখন অধিষ্টিত। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপতির ছেড়ে দেয়া আসনে পূত্র তৌফিক এখন কিশোরগঞ্জ ৪ আসনে সাংসদ। এলাকার সাংসদ তৌফিক হলেও প্রাণের টানে এলাকার লোকজন রাষ্ট্রপতির কাছেই নিয়মিত আসেন। রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের অবাধ যাতায়াত।
আলাপকালে রাষ্ট্রপতির এলাকার লোকজনদের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, আমি হামিদ তোমাদের ভাই। তোদের কাছে আমি কোন রাষ্ট্রপতি না। কিন্তু এলাকার লোকজন বা পরিচিতরা তাকে এখন আর হামিদ ভাই হিসাবে ডাকেন না, মহামান্য হিসাবেই ডাকেন, সেভাবেই কথা বলেন। হামিদের জায়গায় মহামান্য সম্বোধন রাষ্ট্রপতি নিজেও সময়ের ব্যবধানে মেনে নিয়েছেন।
বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, ১০ টা থেকে সাড়ে ১০ টার মধ্যে রাষ্ট্রপতি ঘুম থেকে ওঠেন। বঙ্গভবনের ভিতরে রাষ্ট্রপতি কোনও প্রটোকল মেইনটেইন করেন না। মেইনটেইন করতে চান না। নিজেই উদ্দ্যোগী হয়ে কর্মচারী, কর্মকর্তাদের সাথে প্রতিনিয়ত কুশলাদী বিনিময় করেন। এ কারণে বঙ্গভবনের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা রাষ্ট্রপতির উপর দারুন খুশী। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে বঙ্গভবনে রান্নাবান্না চলাকালে রাষ্ট্রপতি প্রটোকল ভেঙ্গে রান্নাঘর কিংবা অনুষ্ঠানস্থলের প্যন্ডেল পর্যন্ত চলে যান। সার্বিক খোজঁ খবর নেন। তার প্রাত্যাহিক রুটিনে দেখা গেছে, ঘুম থেকে উঠে সকালে এক কাপ চা’র সাথে হাল্কা স্নাকস জাতীয় খাবার খেয়ে দৈনন্দিন পেপার কাটিং দেখেন। ঘন্টা খানিকের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে রাষ্ট্রপতি ১২ টা নাগাদ তার অফিস রুমে ঢোকেন। টানা অফিস করেন সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত। দেশী-বিদেশী দর্শনার্থী থাকলে তাদের সাক্ষাত দেন। সারাদিনে সকালে ঘুম থেকে ওঠে একবার, আর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় রাষ্ট্রপতি খাবার গ্রহণ করেন। এছাড়া দিন-রাত সমানে বিদেশী বেনসন সিগারেট রাষ্ট্রপতির প্রিয় সঙ্গী। এরপরে চলে মধ্যরাত পর্যন্ত আড্ডা। এ আড্ডায় স্কুল-কলেজ জীবনের স্মৃতিচারণ, রাজনীতি, চলমান বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা, এমনকি সাংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়েও আলোচনা চলে। আমৃত রাষ্ট্রপতি দেশের কল্যানে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যেতে চান।
রাষ্ট্রপতি’র ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্পীকার থাকা-কালিন সংসদের বাসভবনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ, সাবেক খাদ্য মন্ত্রী ডঃ আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক বানিজ্য মন্ত্রী ফারুক খান, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, সাবেক মন্ত্রী মাহাবুবুর রহমান, হুইপ আতিকুর রহমান, ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট ফজলে রাব্বি, চট্টগ্রামের সাংসদ ফজলে করিম নিয়মিত আসতেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এরা নিজ নিজ ভূবনে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় বঙ্গভবনে আসেন না। রাষ্ট্রপতি হামিদ প্রতিনিয়ত এদেরকে মিস করেন। জানা গেছে, আফজাল সু’জের মালিক সাংসদ আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জের সাংসদ একভোকেট সোহরাব আলী এখন প্রতি রাতেই বঙ্গভবনে আসেন। দেশে থাকলে তাজউদ্দিন পূত্র, সাবেক মন্ত্রী সোহেল তাজও রাষ্ট্রপতির আড্ডায় নিয়মিত শ্রোতা।
এ ছাড়া, এলাকার লোকজন তো আছেই আড্ডায়। ব্যক্তি জীবনে রাষ্ট্রপতি ভোজন রসিক, একই সাথে খুব অতিথি পরায়ন। আগত লোকজনকে চা, নাস্তার পাশাপাশি রাতের খাবার না খাইয়ে রাষ্ট্রপতি কাউকে বিদায় দিতে নারাজ। আলাপকালে, রাষ্ট্রপতি আগত অতিথিদের সাথে সবসময় তার নিঃসঙ্গতার কথা তুলে ধরেন। আক্ষেপ করে বলেন, এ শৃঙ্খল জীবন বড় কষ্টের।
এর বাইরে রাষ্ট্রপতি তার স্ত্রী, ৩ ছেলে তৌফিক, তুহিন, তুষার, ১ মেয়ে স্বপনা ও নাতী-নাতনীদের নিয়ে সময় কাটান। ৪ সন্তানই বিবাহিত। বড় ছেলে সাংসদ তৌফিক, নিজ পরিবার নিয়ে লালমাটিয়াতে থাকেন, অন্যরা সবাই বঙ্গভবনের বাসিন্দা। সুযোগ হলেই রাষ্ট্রপতি নিজ জন্মভূমি কিশোরগঞ্জে ছুটে যান। এর বাইরেও রাষ্ট্রপতি দেশের ভিতর সুন্দরবন, কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, বান্দরবন ঘুরে এসেছেন। চিকিৎসার্থে সিঙ্গাপুরেও ঘুরে এসেছেন।ভাটির মানুষ এর কাছে উনি ভাটির পিতা হিসাবে পরিচিত। সহজ, সরল,সুন্দর মনের অধিকারী। বেচে তাক হাজার বছর এই কমনায় করি।
ভূল তাকতে পারে।উক্ত তথ্য সম্পর্কে আপনার মাতামত, সংশোধন, পরিবর্ধন বা পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে আমাদের কমেন্ট করে জানান।
Faysal Ahmed Prodip(Himu).
Post a Comment